সারাদেশ

২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করবেন মো. সাহাবুদ্দিন : ইসির প্রজ্ঞাপন

  প্রতিনিধি ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ১:৪৬:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ

দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হলেন মো. সাহাবুদ্দিন। গতকাল সোমবার তাকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যাচাই-বাছাই শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল এ ঘোষণা দেন। এরপর বিকালে মো. সাহাবুদ্দিনকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন।

দুপুরে সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, রাষ্ট্রপতি পদে একজনই মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। মাত্র একজনের মনোনয়নপত্র বৈধ হওয়ায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন অনুযায়ী, মো. সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হলো। তিনি জানান, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১২ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত সময়ে মো. সাহাবুদ্দিনের নামে দুটি মনোনয়নপত্র জমা পড়ে। ১৩ ফেব্রুয়ারি বাছাইয়ের সময় একটি মনোনয়নপত্র সম্পূর্ণরূপে বৈধ হয়েছে। সেক্ষেত্রে আরেকটি মনোনয়নপত্র গ্রহণের আবশ্যকতা ছিল না।

দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচিত ঘোষণাপত্র পড়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনের জন্য জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র পরীক্ষার পর মাত্র একজনের মনোনয়নপত্র বৈধ থাকায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আইন-১৯৯১ অনুযায়ী মো. সাহাবুদ্দিন, পিতা-মরহুম শরফুদ্দিন আনছারীকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।

সংবিধান অনুয়াযী, রাষ্ট্রপতি দায়িত্ব গ্রহণের তারিখ থেকে ৫ বছরের জন্য পদে অধিষ্ঠিত থাকেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। সেই অনুযায়ী, তার ৫ বছরের মেয়াদ আগামী ২৩ এপ্রিল শেষ হবে।

মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় রাষ্ট্রপতি প্রার্থীর প্রস্তাবক আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও সমর্থক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।

এর আগের দিন রবিবার রাষ্ট্রপতি হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিনকে মনোনয়ন দেয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল ওইদিন নির্বাচন কমিশনে গিয়ে রাষ্ট্রপতি পদে দলের প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশনে যায়। পরে তারা দলের প্রার্থী সাহাবুদ্দিনকে নিয়ে কমিশন কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।

মো. সাহাবুদ্দিন ব্যক্তিগত জীবনে এক পুত্র সন্তানের জনক। তার স্ত্রী প্রফেসর ড. রেবেকা সুলতানা সরকারের সাবেক যুগ্ম সচিব। সাহাবুদ্দিন পেশায় একজন আইনজীবী। তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য।

মো. সাহাবুদ্দিন চুপ্পু ১৯৪৯ সালের ১০ ডিসেম্বর পাবনায় জন্মগ্রহণ করেন । তিনি ইতিপূর্বে জেলা ও দায়রা জজ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে পাবনা জেলার স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) বিভাগে যোগদান করেন। ১৯৯৫ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিস এসোসিয়েশনের মহাসচিব নির্বাচিত হন। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালয় নিযুক্ত সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনপরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতাকর্মীর দ্বারা সংঘটিত হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠন এবং মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অনুসন্ধানে গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি ছাত্র জীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ১৯৭৪ সালে পাবনা জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সালে সংঘটিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর তিনি কারাবরণ করেন। আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আরও খবর

Sponsered content

BengaliEnglishHindi